ইমাদ উদ দীন॥ ব্রীজ আছে ঠিকই। কিন্তু নেই রাস্তা। তাই এলাকাবাসীর প্রয়োজনীয় ব্রীজটি নীরবে দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনো কাজে আসছেনা। এমন অবস্থায় কেটে গেছে ২২ বছর। তারপরও কাটছেনা ব্রীজটির নিঃসঙ্গতা। প্রতিনিয়তই ব্রিজটির এমন দূর্দশার স্বাক্ষী হচ্ছেন। নানা স্থানে ধর্ণাও দিচ্ছেন। তারপরও কিছুতেই কোনো গতি হচ্ছেনা ব্রীজটির সংযোগ সড়কের। এমন বক্তব্য এশিয়ার অন্যতম ও দেশের সবচেয়ে বড় হাওর ঐতিহ্যবাহী হাকালুকি হাওর পাড়ের বাসিন্দা স্থানীয় উপকারভোগীদের। তারা জানালেন ব্রীজটি নির্মাণের পর আশান্বিত হয়েছিলেন। কিন্তু এতোদিন পরও তাদের বয়ে চলা সেই দূর্ভোগ লাঘব হয়নি। কবে যে হবে সেই ভরসাও দিচ্ছেন না কেউ।
জানা গেল ওই রাস্তার আশায় প্রায় ২ যুগ ধরে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন হাওর পাড়ের কয়েক সহ¯্রাধিক মানুষ। জেলার কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের বড়দল ও কাড়েরা গ্রামসহ কাদিপুর ইউনিয়নের ছকাপনসহ কয়েক গ্রামের কৃষকরা শ্রীকন্টি বিল থেকে হাকালুকি হাওরে যাতায়াত করেন ওই পথে। একসময় ব্রীজটির উপর দিয়ে হাওরের নিম্নাঞ্চল পর্যন্ত কৃষি জমি চাষাবাদ করতেন তারা। স্থানীয় রাখাল ও জেলেদেরও মাছ ধরার জন্য ওই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয় হাওরে। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে উপকারভোগীদের বয়ে চলা এই দূর্ভোগ লাগবে নির্মিত হয় ওই ব্রীজ। কিন্তু নির্মাণ হওয়ার ২২ বছর থেকেই সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রীজটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এ কারণে স্থানীয় এলাকার কৃষিজীবী ও মৎস্যজীবীদের দূর্ভোগের অন্তনেই। ব্রীজের উভয়পাশে রাস্তাটিতে পর্যাপ্ত মাটি ভরাটের মাধ্যমে নতুন করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে ৫-৬টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত সমস্যা লাঘব হত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান ১৯৯৭ সালে সরকারিভাবে এলজিইডির স্বল্পব্যয়ী সেতু বা কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০ মিটার দীর্ঘ এই ব্রীজ ও এক কিলোমিটার মাটির রাস্তা তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় বাসিন্দারা ৫-৬ বছর এই ব্রীজ ও রাস্তা ব্যবহারে উপকৃত হচ্ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী বছরগুলোতে দফায় দফায় বন্যায় রাস্তাটি বিলীন হয়ে যায়। এরপর রাস্তাটিতে মাটি ভরাটের আর কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন আমাদের এই রাস্তাটি হাওরে যাওয়ার একমাত্র পথ। আর হাওরই হচ্ছে আমাদের জীবন জীবিকার অন্যতম মাধ্যম। তাই বাধ্য হয়ে ওই পথ ব্যবহার করতে হয়। এবং বছর জুড়ে কষ্টের শিকার হতে হয়। তারা জানান সেতুর সাথে (বড়দল-ছকাপন) সংযোগ সড়ক না থাকায় আমরা কৃষিজ পণ্য,মৎস্য ও গৃহপালিত পশু নিয়ে খাল দিয়ে নানা কষ্ঠে পারাপার হচ্ছি। যাতায়াতে সুবিধার্থেই ব্রীজটির সংযোগ সড়ক পুনঃনির্মাণ করলে এলাকাবাসী উপকৃত হত। ভূকশিমইল ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির বলেন ব্রীজ যেহেতু আছে সেখানে রাস্তা করা খুবই জরুরী। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত যাতে সংযোগ সড়ক নির্মিত হয় সে প্রচেষ্ঠা চালাচ্ছি। এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী বলেন বিষয়টি জেনেছি। গ্রামীণ অবকাটামো উন্নয়ন খাত টি আর ও কাবিখা প্রকল্প থেকে এই রাস্তাটি নতুন করে মেরামত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।